
ঔপন্যাসিক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
ঔপন্যাসিক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে। তিনি কেবল একজন ঔপন্যাসিকই নন, বরং বাংলা গদ্য ও উপন্যাসের বিকাশের পথিকৃৎ। জন্মগ্রহণ করেছিলেন ২৬ জুন ১৮৩৮ সালে, বর্তমান উত্তর ২৪ পরগনা জেলার কাঁঠালপাড়া গ্রামে।
বঙ্কিমচন্দ্রের লেখায় ছিল এক অদ্ভুত জাদু। তাঁর প্রথম উপন্যাস রাধারমণ প্রকাশিত হয়েছিল ১৮৬৫ সালে। কিন্তু তাঁর শ্রেষ্ঠ কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো কপালকুণ্ডলা, যা বাংলা সাহিত্যের প্রথম আধুনিক উপন্যাস হিসেবে বিবেচিত।
শিক্ষা ও শৈশব
বঙ্কিমচন্দ্রের শৈশব কাটে কাঁঠালপাড়াতেই, যেখানে তিনি পাঁচ বছর বয়সে কুল-পুরোহিত বিশ্বম্ভর ভট্টাচার্যের কাছে শিক্ষালাভ করেন। ছোটবেলা থেকেই তাঁর অসামান্য মেধার পরিচয় পাওয়া যায়।
লেখালেখির শুরু
১৮৬৫ সালে তিনি যখন প্রথম উপন্যাস লেখেন, তখন বাংলা সাহিত্যে নতুন একটি দিগন্ত উন্মোচিত হয়। তাঁর লেখায় সমাজের বিভিন্ন দিক উঠে আসে, বিশেষ করে নারীর অবস্থান এবং স্বাধীনতা।
বঙ্কিমচন্দ্রের অবদান
- বাংলা উপন্যাসের ভিত্তি স্থাপন: বঙ্কিমচন্দ্র বাংলা উপন্যাসের প্রথম সার্থক লেখক। তাঁর লেখায় ছিল সামাজিক বাস্তবতা ও মানবিক সম্পর্কের গভীরতা।
- সাহিত্যিক চিন্তাধারা: বঙ্কিমচন্দ্রের লেখায় রাজনৈতিক ও সামাজিক চিন্তাধারা ছিল প্রবল। তিনি সমাজের অসঙ্গতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
- নারীর অধিকার: তাঁর লেখায় নারীর স্বাধীনতা ও অধিকারকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যা তখনকার সমাজে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি।
শেষ জীবন ও মৃত্যু
বঙ্কিমচন্দ্রের শেষ জীবন ছিল স্বাস্থ্যগত কারণে কষ্টকর। ১৮৯৪ সালের মার্চ মাসে তাঁর বহুমূত্র রোগ বেড়ে যায় এবং ৮ এপ্রিল তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যু বাংলা সাহিত্যের জন্য একটি অপূরণীয় ক্ষতি।
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সাহিত্যকর্ম আজও আমাদের মনে জীবন্ত। তাঁর লেখা শুধু গল্প নয়, বরং সমাজের কথা বলার একটি মাধ্যম। তাই, বাংলা সাহিত্যের এই মহান ব্যক্তিত্বকে স্মরণ করা আমাদের দায়িত্ব। 😊