সাঁওতাল বিদ্রোহ: একটি ঐতিহাসিক পর্যালোচনা
সাঁওতাল বিদ্রোহ, যা সাঁতাল হুল নামেও পরিচিত, ১৯ শতকের মাঝামাঝি সময়ে ব্রিটিশ ভারতে সংঘটিত একটি গুরুত্বপূর্ণ ঔপনিবেশিক ও জমিদারি শাসন-বিরোধী আন্দোলন। এই বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিল সাঁওতাল জনগোষ্ঠী, যারা নিজেদের অধিকার ও ভূমির জন্য লড়াই করেছিল।
বিদ্রোহের পটভূমি
১৮৫৫ সালে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ ও বিহারের ভাগলপুর জেলায় সাঁওতাল বিদ্রোহের সূচনা হয়। এই সময়ে সাঁওতাল জনগণ জমিদারদের অত্যাচার ও ব্রিটিশ শাসনের নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। সাঁওতালরা তাদের ঐতিহ্যবাহী অস্ত্র, যেমন তীর-ধনুক ও দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করে বিদ্রোহ শুরু করে।
বিদ্রোহের সময়কাল
১৮৫৫ সালের ৩০ জুন বিদ্রোহ শুরু হয় এবং ১৮৫৬ সালের নভেম্বর মাসে তা শেষ হয়। এই সময়কালে সাঁওতালরা ইংরেজ বাহিনীর আধুনিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করে, যা তাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।
প্রধান নেতৃবৃন্দ
সাঁওতাল বিদ্রোহের প্রধান নেতা ছিলেন সিধু মুরমু, যিনি বিদ্রোহের সংগঠক এবং প্রেরণাদাতা হিসেবে কাজ করেন। তাঁর ভাই কানু মুরমুও এই আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
বিদ্রোহের ঘটনাবলী
বিদ্রোহের সময়, ৭ই জুলাই দিঘি থানার মহেশলাল দারোগাসহ ১৯ জনকে হত্যা করে বিদ্রোহীরা। এই ঘটনার পর, ব্রিটিশ সরকার বিদ্রোহ দমন করার জন্য বিভিন্ন রেজিমেন্ট ও সশস্ত্র বাহিনীকে মোতায়েন করে।
বিদ্রোহের পরিণতি
বিদ্রোহের সময় সিধু মুরমু বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হন এবং পরে তাঁকে গ্রেপ্তার করে হত্যা করা হয়। কানু মুরমু সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর গুলিতে নিহত হন। এই বিদ্রোহের ফলে সাঁওতাল জনগণের মধ্যে একটি নতুন রাজনৈতিক সচেতনতা তৈরি হয়, যা পরবর্তী সময়ে ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের একটি অংশ হয়ে ওঠে।
উপসংহার
সাঁওতাল বিদ্রোহ ভারতীয় ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এটি শুধুমাত্র একটি স্থানীয় আন্দোলন ছিল না, বরং এটি ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে একটি বৃহত্তর প্রতিরোধের অংশ ছিল। সাঁওতাল জনগণের এই সংগ্রাম আজও আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, অধিকার ও স্বাধীনতার জন্য লড়াই কখনো শেষ হয় না।




















What is Metabolism Ignite?
Health
Fitness
Lifestyle
Tech
Travel
Food
Education
Parenting
Career & Work
Hobbies
Wellness
Beauty
Cars
Art
Science
Culture
Books
Music
Movies
Gaming
Sports
Nature
Home & Garden
Business & Finance
Relationships
Pets
Shopping
Mindset & Inspiration
Environment
Gadgets
Politics