
দামিনী কোহ কি
দামিনী কোহ কি
দামিনী কোহ, যা সাঁওতাল বিদ্রোহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, ১৯ শতকের ব্রিটিশ ভারতে সংঘটিত একটি সশস্ত্র সংগ্রাম। এই বিদ্রোহের মূল উদ্দেশ্য ছিল সাঁওতাল জনগণের অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষা করা। সাঁওতালরা ব্রিটিশ শাসন, জমিদার ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করেছিল।
সাঁওতাল বিদ্রোহের পটভূমি
১৮৫৫ সালে সাঁওতালরা তাদের অধিকার ও জমি রক্ষার জন্য বিদ্রোহ ঘোষণা করে। এই সময়ে, সাঁওতালরা ইংরেজ সরকার ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে লিপ্ত হয়। সাঁওতালদের মধ্যে একটি শক্তিশালী নেতৃত্ব ছিল, যার মধ্যে প্রধান নেতা ছিলেন সিধু মুরমু।
সিধু মুরমুর নেতৃত্ব
সিধু মুরমু ছিলেন সাঁওতাল বিদ্রোহের অন্যতম প্রধান নেতা। তাঁর নেতৃত্বে সাঁওতালরা একত্রিত হয়ে সংগ্রামে অংশগ্রহণ করে। তবে, কিছু বিশ্বাসঘাতকতার কারণে তিনি গ্রেপ্তার হন এবং পরে গুলি করে হত্যা করা হয়। তাঁর মৃত্যু সাঁওতালদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করে, কিন্তু সংগ্রাম অব্যাহত থাকে।
বিদ্রোহের ফলাফল
বিদ্রোহের পর, ইংরেজ সরকার সাঁওতালদের অভিযোগ সম্পর্কে তদন্তের ব্যবস্থা করে। সাঁওতাল বিদ্রোহের পরবর্তী সময়ে, ভাগলপুর ও বীরভূমের কিছু অংশ নিয়ে ৫,৫০০ বর্গ মাইল জুড়ে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গঠন করা হয়। দেওঘর ও দুমকা এই অঞ্চলের প্রধান কার্যালয় হিসেবে নির্ধারিত হয়।
সাঁওতালদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য
সাঁওতাল জনগণের মধ্যে একটি সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রয়েছে। তাঁরা নিজেদের মধ্যে সম্মানের অনুভূতি বজায় রাখে এবং শিকারে বিষাক্ত তীর ব্যবহার করে, তবে শত্রুদের বিরুদ্ধে কখনোই নয়। এই সংস্কৃতি তাঁদের সংগ্রামের অংশ এবং তাঁদের ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করে।
উপসংহার
দামিনী কোহ বা সাঁওতাল বিদ্রোহ একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় যা সাঁওতাল জনগণের সংগ্রাম এবং অধিকার আদায়ের ইতিহাসকে চিত্রিত করে। এই বিদ্রোহের মাধ্যমে সাঁওতালরা নিজেদের অধিকার রক্ষার জন্য যে সাহসিকতা দেখিয়েছে, তা ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
