
গণ আন্দোলনৰ অভ্যুত্থান
গণ আন্দোলনৰ অভ্যুত্থান
বাংলাদেশের ইতিহাসে গণ আন্দোলন একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ১৯৬৯ সালের গণ আন্দোলন, যা পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) সংঘটিত হয়, তা স্বাধীনতার পথে একটি মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত। এই আন্দোলনটি মূলত আইয়ুব খান সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের অসন্তোষ ও প্রতিবাদের ফলস্বরূপ উদ্ভূত হয়।
পটভূমি
১৯৬০-এর দশকের শেষের দিকে, পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক অসন্তোষ বৃদ্ধি পেতে থাকে। আইয়ুব খান সরকারের নীতিগুলি পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের জন্য ক্ষতিকর প্রমাণিত হয়। বিশেষ করে, রাজনৈতিক অধিকার ও অর্থনৈতিক বৈষম্য নিয়ে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ বাড়তে থাকে।
আন্দোলনের সূচনা
১৯৬৯ সালের ১৭ই জানুয়ারি থেকে আন্দোলনের সূচনা হয়। এই সময়ে, ছাত্র ও যুব সমাজ আন্দোলনের অগ্রভাগে আসে। ২০শে জানুয়ারি, ছাত্র নেতা আসাদুজ্জামান আসাদ নিহত হলে আন্দোলন আরও তীব্র হয়ে ওঠে। আসাদের মৃত্যুর পর, জনগণের মধ্যে প্রতিবাদের আগুন জ্বলে ওঠে এবং ২৪শে জানুয়ারি একটি হরতালের ডাক দেওয়া হয়।
২৪শে জানুয়ারির ঘটনা
২৪শে জানুয়ারি, ১৯৬৯, পূর্ব পাকিস্তানে একটি বিশাল গণ অভ্যুত্থান ঘটে। এই দিনে পল্টন ময়দানে পাঁচ লক্ষ মানুষের সমাবেশ ঘটে। জনগণের মধ্যে প্রচণ্ড আক্রোশ ও ক্রোধ কাজ করছিল। এই সমাবেশে বক্তারা সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় প্রতিবাদ জানান।
গণ অভ্যুত্থানের ফলাফল
গণ অভ্যুত্থানের ফলে আইয়ুব খান সরকার বাধ্য হয় ইয়াহিয়া খানের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে। এই পরিবর্তন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের জন্য একটি নতুন রাজনৈতিক দিগন্ত উন্মোচন করে। আন্দোলনের ফলে রাজনৈতিক পরিবর্তন ও নতুন সরকারের গঠন সম্ভব হয়।
গণ আন্দোলনের গুরুত্ব
১৯৬৯ সালের গণ আন্দোলন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ভিত্তি স্থাপন করে। এটি পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি করে এবং স্বাধীনতার জন্য সংগ্রামের প্রেরণা জোগায়। এই আন্দোলনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়।
উপসংহার
গণ আন্দোলনের অভ্যুত্থান বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক পরিবর্তন নয়, বরং জনগণের অধিকার ও স্বাধীনতার জন্য একটি সংগ্রাম। এই আন্দোলনটি ভবিষ্যতের প্রজন্মের জন্য একটি শিক্ষা হিসেবে কাজ করবে, যে কিভাবে জনগণের ঐক্য ও সংগ্রাম একটি জাতির ইতিহাসকে পরিবর্তন করতে পারে।